
চট্টগ্রামে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, একই সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মোট মৃত্যুর মধ্যে প্রায় ৫৩ শতাংশই নারী। চিকিৎসকদের মতে, নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়া এবং অসচেতনতার কারণে তাদের মৃত্যুর হার বাড়ছে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ জন নারী।
চলতি বছরে মোট মৃত্যুর মধ্যে ৫৩ শতাংশ নারী, আর ৩৫ শতাংশ পুরুষ, যার সংখ্যা ১০ জন। এছাড়া, ৩ জন শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।
মৃত্যুর সংখ্যায় নারীদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও আক্রান্তের ক্ষেত্রে পুরুষদের সংখ্যা বেশি। এ বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে ৩ হাজার ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৬৮৭ জন পুরুষ, যা মোট আক্রান্তের ৫৪ শতাংশ। অপরদিকে, নারীদের সংখ্যা ৮৬৫ জন, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ২৮ শতাংশ।
কম আক্রান্ত হলেও নারীর মৃত্যুর উচ্চ হারের জন্য বিশেষজ্ঞরা নারীদের জীবনধারণ প্রক্রিয়াকেই দায়ী করছেন, যা তাদের ডেঙ্গুর পরিবর্তিত ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদী বাংলানিউজকে জানান, অনেক রোগী ডেঙ্গু হলে সেটাকে সাধারণ সর্দি-জ্বর মনে করেন এবং পরীক্ষাও করান না। নিজেদের প্রতি যত্ন না নিয়ে সময়ক্ষেপণ করার ফলে রোগটি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
অতিরিক্ত, নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণত কম থাকে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে এটি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছালে তারা ধাক্কা সামলাতে পারছেন না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে উদাসীনতা তাদের জন্য বিপদ ডেকে আনে, ফলে তারা সবসময় দেরিতে ডাক্তারের কাছে যান। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেলে তখন আর কিছু করার থাকে না। এজন্য আক্রান্তের সংখ্যা পুরুষদের বেশি হলেও নারীদের মৃত্যুর হার বেশি।
বিআইটিআইডির মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুনুর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, নারীদের অনেকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষদের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। সন্তান প্রসবের পর নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও হ্রাস পায়। এ কারণে ডেঙ্গু ভাইরাস খুব দ্রুত তাদের দুর্বল করে ফেলে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের এবং যারা পিরিয়ডের সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হন, তাদের জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।