
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড’ চালু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। বুধবার (২১ মে) কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—পাথরঘাটা সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, গুল এজার বেগম সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, ইমারাতুন্নেসা কিন্ডারগার্টেন, পাঁচলাইশ কিন্ডারগার্টেন এবং কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়—এই কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। মেয়র জানান, সফল বাস্তবায়নের পর পর্যায়ক্রমে চসিক পরিচালিত অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোতেও এই স্বাস্থ্য কার্ড চালু করা হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষা শুধু অভিভাবকদের দায়িত্ব নয়, প্রতিষ্ঠান ও সিটি কর্পোরেশনকেও এ দায়িত্ব নিতে হবে। হেলথ কার্ডের মাধ্যমে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকাদান ও চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টাকেও এই প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি এ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
হেলথ কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়মিত মূল্যায়নের পাশাপাশি আগাম রোগ শনাক্তকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির সুযোগ থাকবে। মেয়র আশা প্রকাশ করেন, এই কার্যক্রম দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, “শৈশব থেকেই শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতন ও দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতেই আমাদের এ উদ্যোগ। ক্লিন, গ্রীন ও হেলদি চট্টগ্রাম গড়াই আমাদের লক্ষ্য।”
‘স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড’-এ শিক্ষার্থীর নাম, জন্মতারিখ, বিদ্যালয়ের নাম, শ্রেণি, অভিভাবকের নাম ও যোগাযোগের ঠিকানাসহ পরিচিতিমূলক তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত মোট ১৪ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষার তথ্য—যেমন ওজন, উচ্চতা, দাঁতের অবস্থা, চোখ-কান, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য, রক্তচাপ এবং হিমোগ্লোবিন—রেকর্ড রাখা যাবে।
এছাড়া কার্ডের একাংশে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্যও সংরক্ষিত থাকবে, যেখানে বিসিজি, পোলিও, হেপাটাইটিস-বি, এমআর, পেন্টাভ্যালেন্ট, টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও র্যাবিসসহ গুরুত্বপূর্ণ টিকার রেকর্ড থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
মুখ্য আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী।
সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহম্মদ।
স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন (রানা), কাপাসগোলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোমা বড়ুয়া এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুর বানু চৌধুরী।