বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর আজ বৃহস্পতিবার আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে এ আদেশ হতে পারে।
রিটের ওপর মঙ্গলবার দুই দফা শুনানি শেষে বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়। বুধবার রিট খারিজের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী কায়সার কামাল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। রিটের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন।
আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন জানান, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে কয়েকটি ‘ভুল’ ছিল। তবে বিরোধীপক্ষের মতে, মামলায় বিবাদী না হয়ে একজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করতে পারেন না—তাই রিট খারিজযোগ্য।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন এবং পরদিন ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তিনি শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন পেয়েছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ভোট, তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ।
ফলাফল বাতিলের দাবিতে ২০২০ সালের ৩ মার্চ আদালতে মামলা করেন ইশরাক। পরে গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়রদের অপসারণ করে ডিএসসিসিতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এরপর ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ মেনে নিয়ে তাপসকে অযোগ্য ঘোষণা করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন এবং ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
এ রায়ের বৈধতা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামের দুই ব্যক্তি আপিলের নোটিশ দেন। তাদের দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত রায় ও গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তারা বলেন, মেয়রের কার্যকাল শেষ হওয়ায় এই রায়ের কার্যকারিতা নেই।
এর প্রেক্ষিতে মামুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে গেজেট ও রায় অবৈধ ঘোষণা এবং ইশরাকের শপথ গ্রহণ বন্ধে নির্দেশনার আবেদন জানানো হয়। হাইকোর্ট এ বিষয়ে আজ আদেশ দেবেন।
এদিকে ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে তার সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তারা মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও যমুনার সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।
