
তিব্বতে মঙ্গলবার সকালে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫ জনে পৌঁছেছে, আহত হয়েছেন ১৩০ জন। বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে শিগাতসে শহরে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার।
শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি আফটারশক হয় বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস। কম্পন পার্শ্ববর্তী নেপাল, ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতেও অনুভূত হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.৮। এতে স্পষ্ট কম্পন টের পাওয়া যায়। ভূমিকম্পে হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, অনেক ভবন ধসে পড়েছে। পরে ওই অঞ্চলে আরও কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়।
তিব্বতের ওই অঞ্চলটি একটি ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনের উপর অবস্থিত, যার ফলে সেখানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। মঙ্গলবারের ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক সময়ে চীনের অন্যতম প্রাণঘাতী বলে বিবেচিত। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভির ভিডিওতে ধ্বংসস্তূপ, ভেঙে পড়া ভবন এবং উদ্ধারকাজের দৃশ্য দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কম্বল সরবরাহ করছেন। চীনের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কেন্দ্র তিংরি কাউন্টিতে তাপমাত্রা বর্তমানে মাইনাস ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সন্ধ্যায় মাইনাস ১৮ ডিগ্রিতে নেমে যাবে। সেখানে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
মাউন্ট এভারেস্টের পাদদেশে অবস্থিত তিংরি কাউন্টি পর্বতারোহীদের প্রিয় গন্তব্য। এক পর্যটন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের নির্ধারিত এভারেস্ট ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে এবং দর্শনার্থীদের জন্য এলাকা বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৯৫০-এর দশকে তিব্বত দখলের পর চীন ওই অঞ্চলে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে, যার মধ্যে গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। চীনা বিমান বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। ড্রোনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হতাহতের সংখ্যা কমাতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার নির্দেশ দিয়েছেন।
নেপালের নামচে এলাকার এক স্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এভারেস্টের কাছে কম্পন অনুভূত হলেও কোনো ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর মেলেনি। এলাকাটি ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত, যেখানে প্রায়ই ভূমিকম্প ঘটে। ২০১৫ সালে কাঠমান্ডুর কাছে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারান এবং ২০ হাজারের বেশি আহত হন। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।