
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৩৫ হাজার ৯০৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ হাজার ৩৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা বেশি। এই সময়ের মধ্যে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। কাস্টম হাউস শুধু রাজস্ব সংগ্রহের কাজ করেনি, বরং দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বন্ড সুবিধা দেওয়া, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং চোরাচালান প্রতিরোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও করেছে। আশা করা হচ্ছে, পরবর্তী ছয় মাসে আরও বেশি রাজস্ব আহরণ সম্ভব হবে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে কাস্টম হাউসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। তবে, আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৮৯২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা কম। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আদায় হয়েছিল ৫ হাজার ১০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ফলে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ হাজার ৪২৬ কোটি ০২ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে, যা প্রবৃদ্ধির হার ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।
কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দেশের বিভিন্ন স্থানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ডলার এবং এলসি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে। তবে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় এখনও বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কিছু নিত্যপণ্যের শুল্ক শূন্য বা কমিয়ে দিয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, তবে আদায়ে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬২১ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পদক্ষেপে ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফিরে আসছে, যার ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।
কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৫১৪৮ কোটি টাকা, তবে আদায় হয়েছে ৬৩১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগস্টে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪৭৯ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৬৪২০ কোটি ১১ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরের জন্য লক্ষ্য ছিল ৭৫৭৮ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৬০৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অক্টোবরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪৩৫ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৬০৬১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। নভেম্বরে লক্ষ্য ছিল ৭৪৫৭ কোটি টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ৫২৫৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু জানান, নানা কারণে যেমন জুলাই বিপ্লব, ইন্টারনেট বন্ধ থাকা, ভয়াবহ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ডলার ও এলসি সংকট, এবং ব্যাংকিং সমস্যার কারণে আমদানি কমেছে। এই কারণে রাজস্বও লক্ষ্য অনুযায়ী কম এসেছে, তবে গত বছরের একই সময়ে তুলনায় কিছুটা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, যদি সরকার ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ করে, তাহলে কাস্টম হাউস রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করতে পারবে। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।